তরুণাস্থিঃ টিস্যুর ম্যাট্রিক্স বা মাতৃকা কনড্রিন (chondrin) নামে অর্ধ-কঠিন ও স্থিতিস্থাপক পদার্থে গঠিত। কনড্রিন কনডোমিউকয়েড (chondromucoid) ও কনড্রোঅ্যালবুনয়েড (Chondroalbunoid) নামক দধরনের প্রোটিন গঠিত। লোহিকোষকে কনডোসাইট (chondrocyte) বলে। ম্যাট্রিক্সে উত্তত বিক্ষিপ্ত কিছু গহ্বর দেখা যায়। প্রত্যেকটি গর্বের ল্যাকুনা (Abacuna) নামে পরিচিত। প্রতিটি ল্যাকুনা এক বা একাধিক কনড্রোসাইট বহন করে। ল্যাকুনাগুলো তরলে পূর্ণ থাকে। পেরিকন্ডিয়াম (perichondrium) নামক তন্তুময় আবরণীতে তরুণাস্থি আবৃত থাকে।
কাজ : ম্যাট্রিক্সের বৈশিষ্ট্যের জন্য অন্যান্য টিস্যু অপেক্ষা অনেক বেশি চাপ ও টান (tension) সহ্য করতে পারে। বিভিন্ন অঙ্গের আকৃতি দান করে। অস্থিসন্ধিতে অবস্থান করে অস্থির প্রান্তভাগকে ঘর্ষনের হাত থেকে রক্ষা করে। মেরুদন্ডী প্রাণিদের ভ্রূণীয় কঙ্কাল ও কন্ড্রিকথিস জাতীয় মাছের অন্তঃকঙ্কাল গঠন করে।
তরুণাস্থির প্রকারভেদ : ম্যাট্রিক্সের গঠনের উপর ভিত্তি করে নিচে বর্ণিত চার ধরনের তরুণাস্থি পাওয়া যায়ঃ
ক.স্বচ্ছ বা হায়ালিন (Hyaline) তরুণাস্থিঃ এর ম্যাট্রিক্স ঈষৎ স্বচ্ছ , নীলাভ, নমনীয় এবং তত্ত্ববিহীন। স্তন্যপায়ীর নাক, শ্বাসনালি, স্বরযন্ত্র প্রভৃতি স্থানে এবং ব্যাঙ ও হাঙরের ভ্রূণে বা পরিণত দেহে প্রচুর পরিমাণে এ ধরনের তরুণাস্থি পাওয়া যায়।
খ. স্থিতিস্থাপক (Elastic) বা পীত-তন্তুময় তরুণাস্থিঃ এর মাটির অসচ্ছ ও হাল্কা হলুদ বর্ণের। ম্যাট্রিক্সে স্থিতিস্থাপক পীততত্ত্ব জমা থাকে। বাইরের দিকের তুলনায় ভেতরের তত্ত্বগুলো ক্ষাক ঘনবিন্যস্ত। বহিঃকর্ণ বা পিনা, ইউস্টেশিয়ান নালি, আলজিহ্বা প্রভৃতি অংশে এ ধরনের তরুণাস্থি পাওয়া যায়। 1
গ. শ্বেত-তন্তুময় (White fibrous) তরুণাস্থিঃ এর ম্যাট্রিক্সে নির্মিত তন্ত্র সমান্তরালে বিন্যস্ত থাকে। বিশেষ কয়েকটি সন্ধিতে, পরিমাণ সাদা বা শ্বেদ বর্ণের, অশাখ, অস্থিতিস্থাপক, কোলাজেন যেমন-দুটি কশেরুকার মধ্যবর্তী অঞ্চলে এ ধরনের তরুণাস্থি পাওয়া যায়।
ঘ. মাট্রিক্সে প্রচুর ক্যালসিয়াম কার্বোনেট জমা থাকে, ফলে অনেকটা চুনময় বা ক্যালসিফাইড (Calcified) তরুণাস্থি : এ ক্ষেত্রে শাহর মতো শক্ত রূপ ধারণ করে। হিউমেরাস ও ফিমারের মস্তকে এধরনের তরুণাস্তি পাওয়া যায়।
আরও দেখুন...